১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কেন দেখা হলো না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে? বিবিসিকে জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

নিজেস্ব প্রতিবেদক

চারদিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হওয়ার কথা ছিল। তবে কোনো এক কারণে সেই সাক্ষাৎটি আর হয়নি। যা নিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে চলে নানা জল্পনা-কল্পনার।

তবে সাক্ষাৎ না হওয়া বিষয়ে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে খোলামেলা কথা বলেছেন ড. ইউনূস।

বিবিসির সাংবাদিক রাজিনি বৈদ্যনাথনের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে অধ্যাপক ইউনূস জানান, তিনি স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহী ছিলেন। তবে এটি না হওয়াকে হতাশার চোখে দেখছেন না। বরং এটি একটি নতুন সুযোগ তৈরি করেছে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, হয়তো তিনি (স্টারমার) ব্যস্ত ছিলেন বা অন্য কোনো কারণে দেখা সম্ভব হয়নি। তবে এতে করে আমার জন্য একটা বড় সুযোগও তৈরি হয়েছে। এখন যেহেতু তিনি ব্যস্ত, আমি তাকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা একসঙ্গে সময় কাটাতে পারবো, যা ঘটছে তা দেখাতে পারবো, এবং তিনি পুরো পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পারবেন। এটা ইতিহাসের একটি বিশেষ মুহূর্ত, যার মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি। একভাবে বললে, আমরা অতীতকে পেছনে ফেলে এক নতুন ভবিষ্যতের সূচনা করছি।

যুক্তরাজ্যে প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি বাস করেন। ব্রিটিশ জীবনে বাংলাদেশি সংস্কৃতিও গভীরভাবে মিশে আছে। তারপরও স্টারমার তার সমমর্যাদার সম্পর্কের ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় বের করতে পারলেন না। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি জানি না আমি হতাশ হবো, নাকি তিনি (কিয়ার স্টারমার)। কোনো কারণে একটা সুযোগ হারালো, আমি জানি না। এজন্যই বলেছি, তার বাংলাদেশে আসা উচিত। একটু নির্ভার থাকবেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি উপলব্ধি করবেন, এই মুহূর্তের মর্ম বুঝতে পারবেন।’

সাক্ষাৎকারে লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের প্রসঙ্গও ওঠে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। যদিও টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং ব্রিটেনের স্বাধীন নৈতিকতা বিষয়ক উপদেষ্টা তাকে নির্দোষ ঘোষণা করেছেন।

বিবিসির ওই সাংবাদিক জানতে চান, ইউনূস কি টিউলিপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন? জবাবে তিনি সাফ জানান, ‘না, আমি দেখা করবো না। এটা একটি আইনি প্রক্রিয়া, এবং আমি সেই প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে চাই না।’

দুদকের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন করলে ইউনূস বলেন, ‘যেহেতু এটি আদালতের বিষয়, তাই আদালতই সিদ্ধান্ত নেবে যে মামলা চালানোর মতো যথেষ্ট উপকরণ আছে কিনা, কিংবা মামলাটি বাতিল করা উচিত কিনা।’

তবে টিউলিপের আইনজীবীদের দাবি—তারা দুদকের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ পাননি। এ বিষয়ে ইউনূসের বক্তব্য, ‘আইনি প্রক্রিয়াগুলো সময় নেয়। বাংলাদেশ কখনও বলেনি, কোনো তথ্য দেওয়া হবে না।’

দুদকের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ইউনূস বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আমি আমাদের দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখি যে, তারা সঠিক কাজটাই করছে।’

টিউলিপকে দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে ইউনূস বলেন, ‘যদি আইন সেটা চায়, তাহলে সেটা হতে পারে।’

সাক্ষাৎকারে আরও উঠে আসে বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের সাহায্য কমার প্রসঙ্গ। এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ব্রিটিশ সাহায্যে কাটছাঁট, এটা একটা বড় ধাক্কা। তবে জীবনে ওঠানামা থাকেই। আজ কমে গেলো, কাল বাড়বে—এখানকার পরিস্থিতির ওপরই সব নির্ভর করে। তবে আমাদের সেই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। যেমন হঠাৎ করে ইউএসএইড সব অর্থ একেবারে বন্ধ করে দিলো— শতভাগ। শেষ। বন্ধ। তখন আমরা দেখলাম, কত বড় ঘটনা ঘটলো বাংলাদেশে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে—সব তহবিল বন্ধ হয়ে গেলো। শূন্য। রোহিঙ্গা সংকট হঠাৎ করেই আমাদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়ালো। বিস্ময়কর এক পরিস্থিতি। কিন্তু আমাদের সেটা মোকাবিলা করতেই হবে। টাকাপয়সা চলে গেছে বলে তো রোহিঙ্গারা হঠাৎ উধাও হয়ে যাবে না।

বিবিসির ওই অনুষ্ঠানে টিউলিপ সিদ্দিককেও অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। তিনি অংশ নেননি, তবে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি না হওয়ায় আমি হতাশ। তিনি এক রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কেন্দ্রে আছেন, যার ভিত্তি কল্পনাপ্রসূত অভিযোগ—যার কোনও প্রমাণ নেই। আমি আশা করি, তিনি এখন এই অপপ্রচার বন্ধের ওপর গুরুত্ব দেবেন, যাতে আদালতেই এটা প্রমাণ হতে পারে যে এই অভিযোগের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।’

প্যারিস এয়ার শোতে চীনের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান

হাসিনার মামলা ঘিরে ট্রাইব্যুনালের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

গাজায় আরও ৫৯ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরাইল

ডেঙ্গুর পাশাপাশি করোনা বাড়াচ্ছে উদ্বেগ

ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠকে রাজনীতিতে স্বস্তির পরিবেশ ফিরেছে

ট্রেন্ডিংয়ে মালাইকার ‘ক্ষতিপূরণ’

গ্রস রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

এবারের ঈদুল আজহা অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় স্বস্তিদায়ক ছিল

নতুন চক্রে কার বিপক্ষে কয়টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ