দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিতে সরকারের প্রচেষ্টা ও প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।তিনি বলেছেন, ‘১৭ কোটি ১০ লাখ মানুষের এ দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা দেশের প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা সুরক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশনের (ইউএসসিআইআরএফ) চেয়ার স্টিফেন স্নেকের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাক্ষাতে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার অভিযোগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বের সাংবাদিকদের বাংলাদেশে এসে নিজ চোখে পরিস্থিতি মূল্যায়নের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘যে কোনো সাংবাদিক, যে কোনো সময় বাংলাদেশ সফর করতে পারেন। গণঅভ্যুত্থানের পর এ দেশে অনেকে এসেছেন।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে হেয় করে সংখ্যালঘু অধিকার ক্ষুণ্নের নামে ‘অপতথ্যের ক্যাম্পেইন’ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ইউনূস। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
জুলাইয়ের অভ্যুত্থানকে ‘কট্টর ইসলামপন্থিদের আন্দোলন’ হিসেবে তুলে ধরতে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের গণমাধ্যমসহ বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছে বলে সাক্ষাতে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সরকার কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু সহিংসতা ও ফিলিস্তিনে গণহত্যা অভ্যন্তরীণভাবে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।
স্টিফেন স্নেকের বৈঠকে ধর্মীয় স্বাধীনতার পাশাপাশি সরকারের সংস্কার পরিকল্পনা, সংবিধান সংশোধন ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।
সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম ও প্রস্তাবিত সংবিধান সংশোধন সম্পর্কে জানতে চান স্টিফেন স্নেক।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবিত যেকোনো সংশোধনেই ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চলছে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ইউনূস বলেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নির্যাতন ও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দুর্দশা তুলে ধরতে ইউএসসিআইআরএফের সমর্থন চান তিনি। তার অনুরোধে জাতিসংঘ আগামী সেপ্টেম্বর মাসে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি বিশেষ সভা আয়োজন করতে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।