পাকিস্তানি শিল্পীদের ঘিরে ভারতীয় বিনোদন জগতে বিতর্ক যেন থামছেই না। পাকিস্তানের কোনো শিল্পী সম্পর্কে নরম সুরে কথা বললে ক্ষুদ ভারতীয় শিল্পীরাই বিভিন্ন মহল থেকে কটাক্ষের মুখে পড়ছেন। পাকিস্তানি শিল্পীদের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় সেসব শিল্পীদেরও বয়কটের ডাক দিচ্ছেন তারা। এবার এমনই পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন ভারতের জনপ্রিয় গায়ক-অভিনেতা দিলজিত দোসাঞ্জ।
ভারতে জল্পনা চলছে, এ তারকার আসন্ন সিনেমা ‘সর্দার জি ৩’-তে দেখা যেতে পারে পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী হানিয়া আমিরকে। মূলত সিনেমাটিতে হানিয়ার সম্ভাব্য উপস্থিতিকে ঘিরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন দিলজিত। বিশেষ করে পশ্চিম ভারতের চলচ্চিত্র কর্মীদের ফেডারেশন (এফডব্লিউআইসিই) তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় এপ্রিল মাসে ভারতের অধিকৃত কাশ্মীরের পেহেলগামে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক হামলার পর। ওই হামলায় ২৬ জন বেসামরিক লোক প্রাণ হারান। এর জেরে পাকিস্তানি শিল্পীদের ভারতে কাজ করার উপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
এই প্রেক্ষাপটে এফডব্লিউআইসিই হানিয়া আমিরসহ পাকিস্তানি শিল্পী নাসির চিন্যোটি, দানিয়াল খাওয়ার ও সেলিম আলবেলাকে ‘সর্দার জি ৩’-তে যুক্ত করার অভিযোগে কড়া সমালোচনা করে।
এফডব্লিউআইসিই-এর সভাপতি বি এন তিওয়ারি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কোনো ভারতীয় শিল্পী যদি পাকিস্তানি শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেন, তাহলে তাকে ‘অসহযোগী’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং প্রয়োজনে ‘দেশদ্রোহী’ তকমাও দেওয়া হতে পারে। তিনি আরও জানান, যে কেউ এই ঐক্যবদ্ধ অবস্থান উপেক্ষা করলে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে।
বিষয়টি আরও জটিল আকার ধারণ করে যখন এফডব্লিউআইসিই ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন-কে চিঠি দিয়ে ‘সর্দার জি ৩’ চলচ্চিত্রের ছাড়পত্র না দেওয়ার অনুরোধ জানায়। তাদের দাবি, পেহেলগামের ঘটনার পর দেশের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে এই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
হানিয়া আমিরের এই সিনেমায় থাকার জল্পনা তখন আরও জোরালো হয় যখন দিলজিত দোসাঞ্জ সিনেমার শুটিং সেট থেকে কিছু ছবি পোস্ট করেন। যদিও ছবিগুলিতে হানিয়ার মুখ স্পষ্ট দেখা যায়নি, তবে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারীরা কিছু সাদৃশ্য খুঁজে পান এবং আরও কিছু পাকিস্তানি অভিনেতার উপস্থিতির ইঙ্গিত দেন।
বিতর্ক বাড়তে থাকায় দিলজিত বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট শেয়ার করেন, তবে তা সত্ত্বেও সমালোচনার ঢেউ থামেনি।