১৩ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ শেষে চীন সফরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজেস্ব প্রতিবেদক

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার সোমবার দুই দিনের সরকারি সফরে চীন যাচ্ছেন। ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘাত ও যুদ্ধবিরতির পটভূমিতে তার এ সফরকে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র আমন্ত্রণে ইসহাক দার ১৯ থেকে ২১ মে বেইজিং সফর করবেন। সফরে তিনি চীনা নেতাদের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও আঞ্চলিক শান্তি-স্থিতিশীলতার ওপর গভীর আলোচনা করবেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘উভয় পক্ষ পাকিস্তান-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পূর্ণ পরিসর পর্যালোচনা করবে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিনিময় করবে’।

ইসহাক দারের এই সফরটি পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে চলমান উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক বিনিময়ের অংশ এবং দুই দেশের ‘অবিচল ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব’-কে আরও জোরদার করার অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

আলোচনায় থাকবে আফগানিস্তানও

এদিকে তালেবান শাসিত আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুততাকি আগামী ২০ মে চীনে পৌঁছাবেন। সেখানে তিনি একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন। যে বৈঠকে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হবে।

সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষাপট

গত মাসে ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। ওই হামলার জন্য ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করলেও কোনো প্রমাণ পেশ করেনি।

এরপর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে এবং সীমান্তজুড়ে সামরিক লড়াই শুরু হয়। ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে আগ্রাসন চালানো শুরু করে।

জবাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এ সংঘাতে ‘অপারেশন বুনিয়ানুম-মারসুস’ নামের প্রতিরোধমূলক সামরিক অভিযান চালায়।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের হামলা ছিল ‘সুনির্দিষ্ট ও আনুপাতিক’ এবং তারা ভারতের ৬টি যুদ্ধবিমান (৩টি রাফালসহ) ও বহু ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

এ সংঘর্ষের সময় পাকিস্তানে ১৩ জন সামরিক সদস্যসহ মোট ৫৩ জন নিহত হন বলে জানিয়েছে দেশটির আইএসপিআর। ৮৭ ঘণ্টা স্থায়ী এই সংঘাত শেষ হয় ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সংঘটিত একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে।

চীনের ভূমিকা ও সমর্থন

সাম্প্রতিক এই সংঘাত চলাকালীন চীন প্রকাশ্যে পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন জানায়। বেইজিংয়ে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত পাকিস্তানকে ‘আয়রন ব্রাদার’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘চ্যালেঞ্জপূর্ণ সময়ে চীন ও পাকিস্তান সব সময় একে অপরের পাশে থেকেছে’।

বিশ্লেষণ

এমন প্রেক্ষাপটে চীনে ইসহাক দারের এই সফর শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয়, দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সমীকরণের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তার ওপর আফগানিস্তানকে যুক্ত করে ত্রিপক্ষীয় কাঠামো গঠনের এই উদ্যোগে চীন নিজেদের আঞ্চলিক নেতৃত্বের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করছে।

পাকিস্তান একইসঙ্গে যুদ্ধবিরতির পরিবেশ ধরে রাখতে চায় এবং আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের ‘অগ্রাসী অবস্থান’কে চ্যালেঞ্জ করতে প্রস্তুত।

চীনে ইসহাক দারের এই সফরের মাধ্যমে আগামী দিনগুলোতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক কোন পথে এগোবে—তা অনেকটাই নির্ধারিত হয়ে যেতে পারে। সূত্র: দ্য নিউজ

হত্যাচেষ্টার অভিযোগে হাসিনা-জয়সহ ২২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

‘সাংবাদিকরা শুধু সমালোচনাই করে না, প্রশংসাও করে’

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার অর্ধশত হলে ‘তাণ্ডব’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চোখে ড. ইউনূস-তারেক রহমান বৈঠক

বাকিংহাম প্যালেসে ড. ইউনূসকে স্বাগত জানালেন রাজা তৃতীয় চার্লস

নিহতের প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি রূপি দেবে টাটা গ্রুপ

লিপু থেকে মিরাজ, বাংলাদেশ পেল ১৭ অধিনায়ক

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি হয়েছে

ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোকবার্তা